একসময় শুধুমাত্র সামরিক ও বৈজ্ঞানিক কাজে ব্যবহৃত হলেও বর্তমানে শখের ফটোগ্রাফি থেকে শুরু করে সিনেমাটোগ্রাফি, ভ্লগ, কনটেন্ট তৈরি, কৃষি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে বাড়ছে ড্রোনের জনপ্রিয়তা। প্রফেশনাল থেকে শুরু করে টয় ড্রোনেরও আছে ব্যাপক চাহিদা। ড্রোনের এই বৈচিত্র্যময় জগতে অসাধারণ সব ফিচার সমৃদ্ধ ও বর্তমানে সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন যেসব ড্রোন আপনি বেছে নিতে পারেন-
ডিজেআই ম্যাভিক ৩
ড্রোনের দুনিয়ায় প্রথমেই আসে ডিজেআই ম্যাভিক ৩-এর নাম। বিশ্বের ড্রোন শিল্পের শীর্ষে অবস্থান করছে ডিজেআই ব্র্যান্ডটি। ম্যাভিক ৩ তাদের একটি প্রিমিয়াম মডেল। এই ড্রোনটির প্রধান বৈশিষ্ট্য এর উন্নত ক্যামেরা ও দীর্ঘ ফ্লাইং টাইম। ম্যাভিক ৩ এ রয়েছে ২০ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা, যা ৫.১কে রেজ্যুলিউশনে ভিডিও রেকর্ড করতে সক্ষম। হ্যাসেলব্লাডের সাথে যৌথভাবে তৈরি ক্যামেরাটি পেশাদার ফটোগ্রাফার ও ভিডিওগ্রাফারদের জন্য আদর্শ। ম্যাভিক ৩-এর ফ্লাইং টাইম ৪৬ মিনিট পর্যন্ত, যা অন্যান্য ড্রোনের তুলনায় অনেক বেশি। এটি ১৫ কিমি পর্যন্ত দূরত্বে উড়তে সক্ষম এবং এর ৩৬০ ডিগ্রি অবস্টাকল ডিটেকশন সিস্টেম ড্রোনটিকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাধা এড়িয়ে চলতে সাহায্য করে। এর কন্ট্রোলারটি অত্যন্ত সহজ ও ব্যবহারবান্ধব, যা ব্যবহারকারীদের জন্য অতিরিক্ত সুবিধা প্রদান করে। ড্রোনটির মূল্য প্রায় ২ লক্ষ টাকা।
অটেল ইভো ২
ডিজেআই ম্যাভিক ৩-এর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে অটেল ইভো ২ খুবই জনপ্রিয়। উন্নতমানের প্রফেশনাল ড্রোনের জন্য পরিচিত অটেল রোবোটিক্স এর প্রিমিয়াম মডেল ইভো ২। ড্রোনটির প্রধান আকর্ষণ এর ৪৮ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা এবং ৮কে রেজ্যুলিউশনে ভিডিও রেকর্ড করতে পারে। এটি ৯ কি.মি. রেঞ্জে প্রায় ৪০ মিনিট পর্যন্ত উড়তে সক্ষম। ৩৬০ ডিগ্রি অবস্টাকল ডিটেকশন সিস্টেম ড্রোনটিকে নিরাপদে উড়ানোর জন্য প্রদান করে অতিরিক্ত সুবিধা। ইভো ২ এর কন্ট্রোলারটি উন্নতমানের সিগন্যালিং সিস্টেম ব্যবহার করে, যা ব্যবহারের সময় কোন রকম সিগন্যাল লসের সম্ভাবনা কমায়। ড্রোনটির মূল্য প্রায় দেড় লক্ষ টাকা।
প্যারট অ্যানাফি
আকর্ষণীয় ডিজাইন এবং মানসম্মত ক্যামেরার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত ড্রোন প্যারট অ্যানাফি। অ্যানাফি ড্রোনটি ২১ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা এবং ৪কে রেজ্যুলিউশনে ভিডিও রেকর্ডিং ক্ষমতা সম্পন্ন। এর ফ্লাইং টাইম ২৫ মিনিট এবং এটি ৪ কি.মি. পর্যন্ত রেঞ্জে কার্যকর। তবে ড্রোনটিতে অবস্টাকল ডিটেকশন ফিচার না থাকার ফলে ব্যবহারকারীর জন্য অসুবিধাজনক হতে পারে। প্যারট অ্যানাফির কন্ট্রোলারটি পোর্টেবল এবং সহজেই বহনযোগ্য। অ্যানাফির মূল্য প্রায় ৬০ হাজার টাকা।
হোলিস্টোন এইচএস৭২০
ড্রোনের জগতে হোলিস্টোন HS720 একটি উল্লেখযোগ্য নাম। সাশ্রয়ী দামের এই ড্রোনটি অত্যন্ত চাহিদাসম্পন্ন। ১২ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরায় এই ড্রোন ২.৭কে রেজ্যুলিউশনে ভিডিও রেকর্ড করতে সক্ষম। এর ফ্লাইং টাইম ২৬ মিনিট যা ১ কি.মি. পর্যন্ত রেঞ্জের মধ্যে কার্যকর। অবস্টাকল ডিটেকশন সিস্টেম না থাকলেও দামের জন্য বিশেষভাবে জনপ্রিয় এই ড্রোন নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য আদর্শ। কারণ এর কন্ট্রোলারটি সহজে ব্যবহারের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে এবং দ্রুত সিগন্যাল রিসিভ করতে সক্ষম। এর দাম মাত্র ২৫ হাজার টাকার মধ্যে।
ফিমি এক্সএইটএসই
শাওমির সাব-ব্র্যান্ড ফিমি, তাদের এক্সএইটএসই মডেলটির মাধ্যমে বাজারে এনেছে একটি সাশ্রয়ী এবং কার্যকরী ড্রোন। ফিমি X8 SE তে ১২ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা এবং ৪কে রেজ্যুলিউশনে ভিডিও রেকর্ডিং সক্ষমতা রয়েছে। এর ফ্লাইং টাইম ৩৩ মিনিট এবং ৮ কিমি পর্যন্ত রেঞ্জে উড়তে পারে। যদিও এতে অবস্টাকল ডিটেকশন সুবিধা নেই, তবে এর কন্ট্রোলারটি ব্যবহার করা অত্যন্ত সহজ এবং ফ্লাইট পরিচালনার জন্য উন্নত প্রযুক্তি সমৃদ্ধ। মূল্য প্রায় ৪০ হাজার টাকা।