২০২২ সালের সেরা সাইন্স ফিকশন সিনেমা

Best Sci Fi Movies 2022 - সেরা সাইন্স ফিকশন সিনেমা

সেরা কিছু সাইন্স ফিকশন সিনেমা আমরা পেয়েছিলাম ২০২১ সালে। এডভেঞ্চার আর বিজ্ঞান বাস্তবতা মিলিয়ে একেকটা উপভোগ করার মতো সিনেমা। এরমধ্যে ডিউন, দ্য মিশেল ভার্সেস মেশিন, গডজিলা ভার্সেস কং এর মতো সুপার হিট সিনেমাগুলো ইতিমধ্যে নিশ্চই দেখে নিয়েছেন। আর না দেখে থাকলে দেখে ফেলুন শিঘ্রই। কিন্তু ২০২২ সালে দেখার মতো সাইন্স ফিকশন সিনেমা আর কোনটা বাকি আছে? চলুন দেখে নেয়া যাক, এই বছরের সেরা কিছু সাই ফাই সিনেমা সম্পর্কে। লেখায় কিছুটা স্পয়লার থাকতে পারে, নিজ দায়িত্বে সতর্কতাসহ পড়ুন।

১. The Adam Project

আপনি হটাৎ একদিন এমন একজন মানুষের খোঁজ পেলেন যার সাথে আপনার কথাবার্তা, স্বভাব হুবহু মিল রয়েছে! তারপর একটা সময় বুঝতে পারলেন সেই মানুষটি আপনিই নিজেই। অর্থাৎ আপনার ভবিষ্যৎ ভার্সন !  

মূলত সিনেমাটি টাইম ট্রাভেল নিয়ে। এডাম প্রজেক্ট অর্থাৎ টাইম মেশিনকে নষ্ট করার উদ্দেশ্য নিয়ে মুভির প্লট। কিন্তু কেন তারা এই প্রজেক্টটি ধংস করতে চায় অতীতে কি এমন হয়েছিল বা ভবিষ্যতে কি এমন ঘটবে জানতে হলে দেখে নিতে পারেন দুর্দান্ত এই সিনেমাটি। কাহিনী ততটাও কঠিন না খুব সহজেই বুঝতে পারবেন। সাথে মার্ক রাফালো তো আছেই। আর সম্ভবত রায়ান রেনল্ডস কখনো হতাশ করেন না। হাতে কোনো মুভি না থাকলে এটা হতে পারে বেস্ট চয়েস!

২. Everything Everywhere All at Once

এবছরের সেরা সিনেমার তকমা ইতোমধ্যে EEAAO পেয়ে গেছে। মুভির প্লটটা হলো, একজন মধ্যবয়সী চাইনিজ মহিলা এভেলিন যে কিনা বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে যেমন ট্যাক্স সমস্যা, তার মেয়ে যে লেসবিয়ান এটা যাতে প্রকাশ না পায় তার প্রচেষ্টা, তার স্বামীর সাথে সম্পর্ক ভালো না যাওয়া ইত্যাদি। হঠাৎ সে মাল্টিভার্স সম্পর্কে জানতে পারে এবং জানতে পারে যে মাল্টিভার্স এখন বিশৃঙ্খলার সম্মুখীন এবং এর পরিসমাপ্তি ঘটানো কেবল তার পক্ষেই সম্ভব। তো সে নেমে পড়ে মাল্টিভার্সের খোয়া যাওয়া শৃঙ্খলা উদ্ধারের মিশনে।

মিশেল ইয়ো, কে হুই কুয়ান, স্টেফানি সু'সহ প্রত্যেক অভিনয়শিল্পীর অভিনয় ছিল দেখার মতো। কে হুই কুয়ান প্রায় ২০ বছর পর অভিনয় জগতে কামব্যাক করলেন। কিন্তু তার অভিনয়ের মধ্যে কোনোরূপ কমতি ছিল না। নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন অভিনয়ের মাঝে। মিশেল ইয়োকে নিয়ে বলার কিছু নেই। তিনি কোন লেভেলের অভিনেত্রী সেটা সবাই জানে। জয়, গংগং চরিত্রে অভিনয় করা অভিনয়শিল্পীরাও দারুণ অভিনয় করেছেন। সবমিলিয়ে সকলের অভিনয় ছিল নজরকাড়া। 

অ্যাকশন নিয়ে কোনো কথা হবে না। মুভিতে যে'কয়টা অ্যাকশন সিকোয়েন্স ছিল সবগুলোই দুর্দান্ত। বিশেষ করে কে হুই কুয়ানের সিকোয়েন্সটা ছিল। ভিএফএক্স খুব ভালো ছিল। মজার কথা হলো এই সিনেমার ভিএফএক্স টিমে মাত্র ৯ জন ছিল। যার মধ্যে দুজন হলেন এই সিনেমার ডিরেক্টর। তারা ভিএফএক্স শেখার জন্য কোনো ট্রেনিং স্কুলে পেশাদার প্রশিক্ষণ নেননি। মুভিটাতে মিশেল ইয়োর অগণিত ভার্সন দেখানো হয়েছে। কিছু কিছু আজব ভার্সন দেখে হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা হয়ে গিয়েছিল। মুভিতে একটা অল্টারনেট ইউনিভার্স দেখানো হয়েছে যেখানে এখনো জীবনের শুরু হয়নি। সেখানে মিশেল ইয়োর ভার্সন একটা পাথর। ওইখানের সিনটা এত সুন্দরভাবে এক্সিকিউট করা হয়েছে যে মুভির মধ্যে হারিয়ে গিয়েছিলাম। সিনটা সম্পর্কে বেশি কিছু বলব না তবে দেখলে বুঝবেন কেন ওই সিনটার এত প্রশংসা করছি। ওখানে ব্যবহৃত সংলাপগুলো হৃদয়কে নাড়া দেয়।

ভবিষ্যতে মুভিটা ক্ল্যাসিক সিনেমার ট্যাগ পেতে যাচ্ছে। সিনেমাপ্রেমী হলে মুভিটা মিস করা কোনোমতেই উচিত হবে না। 

তাহলে আর অপেক্ষা কিসের!? জলদি দেখতে বসে পড়ুন Everything Everywhere All at Once.

৩. Prey

𝗛𝘂𝗹𝘂 তে রিলিজ হয়েছে 𝗣𝗿𝗲𝗱𝗮𝘁𝗼𝗿 ফ্রান্সাইজির সিনেমা 𝗣𝗿𝗲𝘆 2022. আগস্টে আপকামিং মুভি গুলো নিয়ে যথেষ্ট হাইপ ছিলো তার মধ্যে একটা এটি। 

কাহিনি শুরু হয় আজ থেকে প্রায় ৩০০ বছর আগে 𝗡𝗼𝗿𝘁𝗵𝗲𝗿𝗻 𝗚𝗿𝗲𝗮𝘁 𝗣𝗹𝗮𝗶𝗻 নামক যায়গায় একটা উপজাতিদের (𝗖𝗼𝗺𝗮𝗻𝗰𝗵𝗲) জীবনধারা কে কেন্দ্র করেই। 𝗡𝗮𝗿𝘂 যে এই গল্পের লিড রোলে আছে সে টিন এজের একজন মেয়ে। সে প্রমান করতে চায় যে সেও একজন ভালো শিকারী/যোদ্ধা। 

𝗡𝗮𝗿𝘂 একটি 𝗞𝘂𝗵𝘁𝗮𝗮𝗺𝗶𝗮 তে (শিকারীর পথ চলার রীতি) তার দক্ষতা প্রমাণ করার সুযোগের জন্য চেষ্টা করতে থাকে। সে তার লোকেদের মধ্যে একজন দক্ষ ভেষজবিদ এবং নিরাময়কারী হিসাবে পরিচিত, কিন্তু 𝗡𝗮𝗿𝘂 আরও কিছু চায়। যখন তার উপজাতির লোকেরা একটি সিংহ খুঁজতে থাকে যেটি তার গোত্রের একজন যুবককে আক্রমণ করেছে, তখন 𝗡𝗮𝗿𝘂 জঙ্গলে আরও বিপজ্জনক কিছু অনুভব করতে শুরু করে।

এই মুভিতে সিনেমায় ক্যানন এর আগে 𝗣𝗿𝗲𝗱𝗮𝘁𝗼𝗿 দের অস্ত্র কেমন ছিলো তা দেখানো হয়েছে। হ্যান্ড টু হ্যান্ড কমব্যাটে পারদর্শীতা দেখানো হয়েছে। ফাইট সিন গুলা সত্যিই দেখার মত ছিলো। গল্পের 𝗡𝗮𝗿𝘂 চরিত্রটাকে বেশ ভালো ভাবেই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সেও বাকি দের (পুরুষ) মতই যোগ্য তা প্রমান করে দেখিয়েছে। প্রেডেটর সিরিজ প্রেমী হলে তো বটেই, একটা ভালো সিনেমা হিসেবেও দেখে নিতে পারেন প্রে।

৪. Spiderhead

চাইলেই একজন কয়েদি নিজের শাস্তি কমাতে পারে। সাথে গরম খাবার, নরম বিছানা ফ্রি। বিনিময়ে তাকে অংশ নিতে হবে একটা ড্রাগ ট্রায়ালে। কোন সাধারণ ড্রাগ নয় কিন্তু, একটা মানুষ কে মেন্টালি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এইসব ড্রাগ। 

বেসিক প্লট টা বেশ স্ট্রং ছিল এই সিনেমায়। Human Drug Trial এর মত হাই থিম নিয়ে খুব বেশি প্রজেক্ট নজরে আসেনি আগে। ক্রিস হেমসওয়ার্থের অভিনয় ছিলো দুর্দান্ত। যদিও সিনেমাটি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। সময় থাকলে দেখে নিতে পারে।

৫. Moonfall

কিছু একটা চাঁদকে কক্ষপথ থেকে সরিয়ে দিয়েছে ফলস্বরূপ পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার উপক্রম। সম্ভবত শীঘ্রই চাঁদ আছড়ে পড়বে পৃথিবীর বুকে। স্বাভাবিকভাবেই মানুষ এটা প্রতিহত করার চেষ্টা করবে, তাই না? আদতে কী ব্যবস্থা নিয়েছিলো আর পেছনের কারণ কী জানতে হলে দেখতে হবে ‘মুনফল’ সিনেমাটি। একশান, এডভেঞ্চার, সাই-ফাই সব জনরা মিলিয়ে এই সিনেমা।

অভিনয়ে আছেন হ্যালি বেরি, প্যাট্রিক উইলসন, জন ব্র্যাডলি, মাইকেল পেনা, চার্লি প্লামার, কেলি ইউ এবং ডোনাল্ড সাদারল্যান্ড। প্রায় $138-146 মিলিয়ন প্রোডাকশন বাজেটের মুনফল সর্বকালের সবচেয়ে ব্যয়বহুল স্বাধীনভাবে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে একটি। সামাজিক মাধ্যমে বহুল আলোচিত সিনেমাটি না দেখে থাকলে রাখতে পারেন আপনার পরবর্তী দেখার তালিকায়।


Next Post Previous Post